স্প্রিং সরে গেছে মেট্রোরেলের ভায়াডাক্টের

0
HASNAT NAYEM; DP-211

রাজধানীর দ্রুতগতির গণপরিবহন মেট্রোরেলের উড়াল পথের একটি ভায়াডাক্টের স্প্রিং সরে গেছে। এতে ভায়াডাক্টের রুট অ্যালাইনমেন্ট কিছুটা উঁচু-নিচু হয়ে গেছে। ফলে চলাচলে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে এবং এ কারণে আগারগাঁও-মতিঝিল রুটে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে স্প্রিং সরে যাওয়ার ঘটনা বুঝতে পারে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। এমআরটি লাইন-৬ এর দায়িত্বশীল একটি সূত্র ঢাকা পোস্টকে জানায়, রাজধানীর ফার্মগেট ও বিজয় সরণির মাঝামাঝি এলাকায় একটি অংশে ভায়াডাক্ট দেবে গেছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে আগারগাঁও-মতিঝিল রুটের মেট্রো চলাচল। এটি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত এ রুটে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ থাকবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেট্রোরেলের ফার্মগেট স্টেশনের পর ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের সামনের একটি পিলারের ওপরে থাকা ভায়াডাক্টের চারটি স্প্রিং থেকে একটি স্প্রিং সরে গেছে। ফলে সেখানে রুট অ্যালাইনমেন্ট উঁচু-নিচু হয়ে গেছে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটিকে স্প্রিং নয়, বিয়ারিং প্যাড বলা হয়। কোনো কারণে বিয়ারিং প্যাডের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে গেছে বা বিয়ারিং প্যাড সেখান থেকে পড়ে গেছে। না হলে এ ধরনের ঘটনা ঘটার কথা নয়।

এ বিষয়ে মেট্রোরেল পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রউফ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের একটা টেকনিক্যাল ফল্ট হয়েছে। সেটি সারানোর কাজ চলছে। ঘণ্টা দেড়েক সময় লাগতে পারে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে।

কী টেকনিক্যাল ফল্ট? জানতে চাইলে তিনি বলেন, পিলারের ওপরে ভায়াডাক্টে কারিগরিভাবে চারটা স্প্রিং থাকে। এর মধ্যে একটি স্প্রিং ডিসপ্লেস ওয়েতে দেখা যাচ্ছে। আমরা বিষয়টি আইডেন্টিফাই করতে পেরেছি। এর মধ্যেও মেট্রো চালানো যায়, তবে সেটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিষয়টি সমাধান করে তারপর চালানো হবে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, হয়ত বিয়ারিং প্যাডের ফাংশন নষ্ট হয়ে গেছে। বিয়ারিং প্যাডের কাজটা হচ্ছে যখন গাড়ি এটির ওপর দিয়ে যায়, তখন কিছুটা সংকুচিত হয়ে গাড়ি চলে যাওয়ার পর সেটি আগের জায়গায় ফিরে আসবে। যেহেতু ছবিতে দেখা যাচ্ছে ভায়াডাক্ট আগের জায়গায় ফিরে আসেনি, সেহেতু বিয়ারিং প্যাডের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে গেছে। অথবা বিয়ারিং প্যাড এখান থেকে পড়ে গেছে। ভায়াডাক্টের সঙ্গে এই জায়গাটা হচ্ছে একটা জয়েন্ট। এখান থেকে যদি বিয়ারিং প্যাড রিলিজ হয়ে যায়, তাহলে কিন্তু পিলার ভেঙে যাবে। তাই ভায়াডাক্টকে ফ্লেক্সিবল রাখার জন্যই এই বিয়ারিং প্যাড ব্যবহার করা হয়। এ দুটির কোনো একটি ঘটনা না ঘটলে এমনভাবে ভায়াডাক্ট বসে যাওয়ার কথা নয়।

এত অল্প সময়ের মধ্যে বিয়ারিং প্যাড নষ্ট হয়ে যেতে পারে কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টা আমার কাছে একেবারেই অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। কারণ বিয়ারিং প্যাড শুধু গাড়ির লোড নেওয়া নয়, এটি ভূমিকম্পের সময়ও কাজ করে। এই বিয়ারিং প্যাড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি বিশ্বাস করি বিয়ারিং প্যাড লার্জ স্কেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেই এখানে বসানো হয়েছে। তারপরও এমন ঘটনা কেন ঘটল সে বিষয়ে অনুসন্ধান করা দরকার।

অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘ঢাকা পোস্টে’ প্রকাশিত আরও ছবিসহ মূল প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন এখানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *